ঈশক্রিয়া
এই
জগতের
সমস্ত
ঘটনাবলী
এক
অমোঘ
কার্য-কারণ
সম্পর্কের
অধীন।
ঘটে
যাওয়া
কার্য
হল
অপর
কোন
কার্যের
কারণ।
আবার
সেই
কার্য
হল
অপর
নতুন
কোন
এক
কার্যের
কারণ।
এই
কার্য-কারণ
সম্পর্কের
বন্ধনটি
বোঝার
জন্য
আমরা
একটি
দৃষ্টান্তের
সাহায্য
নেব।
গঙ্গানদী
তাপ
ও
হিমবাহ
(কারণ)
|
V
হিমবাহের
গলন
ও
জল
সৃষ্টি
(কারণ)
|
V
জল
ধারা
ও
জল
প্রপাত
(কারণ)
|
V
বিদ্যুৎ
উৎপাদন
(কারণ)
|
V
শক্তির
চাহিদ
পূরণ
(কারণ)
এই
ভাবে
আমরা
দেখতে
পই
সমস্ত
ঘটনবলীই
এক
কার্য কারণ
সম্পর্কের
বন্ধনে আবদ্ধ।
কিন্তু
আদিতে
বা
অন্তে
কোন
নির্দিষ্ট
কারণ
বিহীন
কার্যই
বর্তমান।
মায়া
মায়া
কি?
কার্য-কারণ
সম্পর্কের
বন্ধনে
আবদ্ধ
এই
জগত
তথা
প্রকৃতির
প্রতিটি
সৃষ্টিই
হল
মায়া।
কারণের
অপসারণে
কার্যের
লয়।
এই
জগতের
প্রতিটি
বস্তু
কণাই
সৃষ্টি
ও
ধ্বংসের
চক্রে
আবর্তিত।
এই
প্রকৃতি
তথা
জগতের
প্রতিটি
বস্তুর
অস্তিত্ব
নিতান্তই
বুদবুদের
ন্যায়।
প্রকৃতির
এই
রূপ
পরিবর্তনশীল
প্রকাশই
হল
মায়া।
মায়া
আছে
বলেই
জগত
আছে,
সৃষ্টি
আছে
-
আমরা
আছি।
জগতের
প্রতিটি
জীবের
ক্ষুদ্র
ক্ষুদ্র
ইচ্ছা
যা
প্রতিনিয়ত
নানা
সৃষ্টি
লীলায়
ব্যপ্ত
-
এই
ক্ষুদ্র
ক্ষুদ্র
ইচ্ছা
-
যাকে
আমরা
পরবর্তীতে
ঈশক্রিয়া
বলব
-
এগুলি
কোন
এক
পরম
ইচ্ছার
সঙ্গে
সম্পর্ক
যুক্ত।
এই
পরম
ইচ্ছা
যা
হল
আমাদের
ক্রমবর্ধমান
জ্ঞান
ভূমির
সীমার
ঊর্দ্ধে,
তাকেই
আমরা
জ্ঞান
স্বরূপা-চৈতন্য
স্বরূপা
বলে
অভিহিত
করেছি
বা
কখনো
গুণাতীত
তথা
নির্গুণ
রূপে
ব্যক্ত
করেছি।
যিনি
সেই
জ্ঞানাতীত
ভূমিতে
বিচরণ
করেছেন
তিনি
তাঁকেই
প্রাপ্ত
হয়েছেন।
চৈতন্য
স্বরূপা
আর
তিনি
তাই
অভেদ।
সেই
পরমাত্মা
তথা
পরম
সত্য
ব্যতীত
আর
সকলই
হল
মায়া।
তন্ত্র
কার্য-কারণ
সম্পর্কে ঘটমান নানা ঘটনাবলীর
সুশৃঙ্খল চক্রকেই তন্ত্র বা
system
বলা
যায়। এই তন্ত্র যেমন জাগতিক
বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যেতে
পারে তেমনই আধ্যাত্মিক জগতেও
এই তন্ত্র বিকশিত। বাস্তব
জগতের বিভিন্ন তন্ত্রগুলি
হল সৌরতন্ত্র,
বাস্তুতন্ত্র
(eco
system), সমাজ
তন্ত্র ইত্যাদি। মানুষের
দেহও একটা তন্ত্র। আবার সংবহন
তন্ত্র,
পৌষ্টিক
তন্ত্র,
শ্বসন
তন্ত্র -
এগুলি
মনুষ্য দেহের মধ্যের উপতন্ত্র।
আবার অধ্যাত্ম জগতে যারা এই
তন্ত্র নিয়ে চর্চা করেন,
তাঁদেরকে
বলা হয় তান্ত্রিক।
তন্ত্র
বিনাশের কারণ (Why
system breaks)
System
এর
মধ্যে ঘটতে থাকা অনিয়ম -
যেকোন
ছোট অনিয়মও system
বা
তন্ত্রের কার্যাবলীতে
(functioning)
প্রভাব
ফেলে। কিন্তু system
বা
তন্ত্র তার বিভিন্ন মানকের
(parameter)
পরিবর্তন
ঘটিয়ে সেই প্রভাবকে মানিয়ে
নেয় (adjust
করে
)।
অনিয়ম
বাড়তে থাকলে একসময় তন্ত্রের
উপর হঠাত করে বিশাল প্রভাব
এসে পড়ে। এবং system
বা
তন্ত্র সেটিকে মনিয়ে নেবার
সুযোগ পায় না। প্রচণ্ড অভিঘাতের
প্রভাবে তন্ত্রটি বিদীর্ণ
হয় -
যেমন
করে ক্ষোভ বাড়তে বাড়তে একসময়
পুঞ্জীভূত ক্ষোভ স্ফুলিঙ্গের
ন্যায় চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে
এবং system
কে
ভেঙে দেয়। তন্ত্রের মধ্যে
ঘটে যাওয়া এই ছোট ছোট অনিয়মই
হল system-break
বা
তন্ত্র-বিনষ্টের
বীজ।
system
বা
তন্ত্র অপর আর এক ভাবে ভাঙতে
পারে। যথা মুক্তির বাসনা।
system
এর
অন্তর্গত সত্তা(entity)
গুলি
system
এর
বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে না চাইবার
কারণে system
থেকে
বেরনোর চেষ্টা করে। এই বেরনোর
চেষ্টাকে অনিয়ম বলার চেয়ে
entity
গুলির
নিরন্তর প্রচেষ্টা বা সাধনা
বলাই ভালো। এই যে system
থেকে
বেরনোর চেষ্টা -
এই
হল system-break
এর
বীজ।
যোগী
তাঁর ধ্যান ও যোগ বলে তাঁর
সমগ্র চিত্ত ও মনকে কেন্দিভূত
করে এই অনিয়মকে নিজ নিয়ন্ত্রণে
আনেন। তাঁর পক্ষে এই system
বা
তন্ত্রটি ছিন্ন করা সহজতর।
কার্য-কারণ
সম্বন্ধ যুক্ত এই চক্রে উপরোক্ত
'অনিয়ম'
ও
'system
থেকে
বেরনোর চেষ্টা'
উভয়ই
হল একাধিক কর্ম সম্পাদনের
কারণ এবং অন্তে কোন system-break
এর
কারণ;
আবার
একই সাথে নতুন system
তৈরি
বা রূপায়নের কারণ।
অদ্বৈত
বেদান্ত তথা অদ্বৈত তত্ত্ব
ব্যতীত অপরাপর তত্ত্বে ঈশ্বর
জগত রচনা করেছেন অর্থাৎ system
তৈরি
করেছেন। আবার অদ্বৈত তত্ত্ব
অনুসারে ঈশ্বর নিজেই এই জগত
হয়েছেন। জগতের প্রতিটি বিন্দু
(অর্থাৎ
মানুষ,
পশু,
পক্ষী,
পাহাড়,
পর্বত,
নদী
সবই তিনি অর্থাৎ এক একটি entity)
হলেন
তিনিই। আর যেহেতু এই entity
হলেন
তিনিই সেহেতু তাদের এই স্ব-প্রনদিত
ক্রিয়াগুলিই ঈশক্রিয়া -
যা
একাধিক কার্যের কারণ -
আবার
এমন কারণ যা অপর কোন কারণের
কার্য নয় (আপাতভাবে)।
(
সাধারণভাবে
যেকোন কারণই হল অপর কোন এক
কারণের কার্য)।
এই
ঈশক্রিয়া যেমন ভাঙতে পারে
অর্থাৎ ধ্বংসাত্মক হতে পারে
তেমন গড়তেও পারে অর্থাৎ গঠন
মূলক হতে পারে।
এই
জগতে যত প্রাণী আছে তারা সবাই
কমবেশি মাত্রায় ঈশক্রিয়া
করতে সক্ষম। নিম্নেতর প্রাণী
হাইড্রা তার সূক্ষ্ম পদ সদৃশ
অঙ্গ (আপাত
ভাবে)
বিনা
কারণে সঞ্চালন করে অধিকতর
পূর্ণত্বের প্রচেষ্টায়।
এগুলি ঈশক্রিয়ারই নমুনা। এই
ঈশক্রিয়ার ফলেই প্রাণ অর্থাৎ
চেতন,
জড়
তথা অচেতনের উপর প্রভুত্ব
লাভ করে।
এখানে
ঈশক্রিয়াকে বলা হয়েছে -
“ ইহা
আপাতভাবে অপর কোন কারণের কার্য
নয়"
- এই
আপাতভাবে বলার কারণ যেকোন
কার্যই (যা
অপর কর্ম সকলের কারণ)
যার
কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না
তার কিছু না কিছু লুক্কায়িত
কারণ থাকবে। এই কারণগুলি আদিতে
বা অন্তে এক পরম কারণের সাথে
সম্পর্ক যুক্ত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন